করোনা ভাইরাস : এ গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি
করোনা ভাইরাস এখন আমাদের জন্য বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। এর কারণ মূলত এটি একটা সংক্রামক রোগ। অর্থাৎ ভাইরাসটি একজনের দেহ থেকে আর একজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। এ নিয়ে ২ পর্বের ধারাবাহিক প্রকাশ করছে নগরবার্তা। আজ প্রকাশিত হলো প্রথম পর্ব। আগামীকাল দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব প্রকাশিত হবে। লিখেছেন ডা. হাফিজুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক, ট্রান্সফিউশান মেডিসিন বিভাগ, এনাম মেডিকেল কলেজ।
করোনা ভাইরাস- বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
আধুনিক বিশ্বকে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ বলাই শ্রেয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ আজ সময় ও দূরত্বকে জয় করেছে। কিন্তু প্রকৃতি পরাজয় মানতে চায় না। তাইতো সে মাঝে মাঝে বিধ্বংসী রূপ নিয়ে হাজির হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে চীনে নতুন এক প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসকে করোনা ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভাইরসটির নামকরণ করা হয়েছে 2019 Novel Corona Virus(2019-nCoV)। Severe Acute Respiratory Syndrome(SARS) এর মতো এ ভাইরাসটিও মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে বলে ২১ শে জানুয়ারি ২০২০ এ প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করে চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
করোনা ভাইরাস- বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ২০০২-২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ঐ সময় চীনের মূল ভূখন্ডে ও হংকংয়ে প্রায় ৮ শতাধিক মানুষ মারা যায়। এবার চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়। এরপর বেইজিংসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া,জাপান ও থাইল্যান্ডেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,জার্মানি ও ভিয়েতনামসহ প্রায় ২৫ টি দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এতোটাই মারাত্নক রূপ ধারণ করেছে যে WHO ( বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে স্বাস্থ্যবিষয়ক বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
করোনা ভাইরাস কী?
করোনা ভাইরাস একটি RNA ভাইরাস। ১৯৬০ সালে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়। এটি মূলত ভাইরাসের বড় একটি গোত্র। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের যে প্রজাতির সংক্রমণ ঘটেছে তা এর আগে দেখা যায়নি। ভাইরাসটি মানুষ এবং পশু-উভয়ের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। কোনো রকম স্পর্শ ছাড়াই মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় ভাইরাসটি। তবে SARS এর মতো আগ্রাসী নয় ভাইরাসটি।
ইনকিউবেশন পিরিয়ড/ সুপ্ত অবস্থা
Centers for Disease Control and Prevention (CDC) এর মতে ভাইরাসের সুপ্ত অবস্থা ২-১৪ দিন পর্যন্ত। স্বাভাবিক নিয়মে এই সময়ে সাধারনত ভাইরাস অন্য দেহে ছড়ানোর কথা না। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে এ ভাইরাসটি তার সুপ্ত অবস্থাতেই অন্য দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে আপাতভাবে সুস্থ মানুষটি- যিনি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু লক্ষণ প্রকাশিত হয়নি তিনিও অবলীলায় এটি ছড়াতে পারেন।
যেভাবে ছড়াতে পারে
যেভাবে ছড়ায় করোনা
- আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে (respiratory droplet)
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে।
- ভাইরাস আছে এমন কোনো কিছু স্পর্শ করে হাত না ধুয়ে মুখে,নাকে বা চোখে লাগালে।